ভীষণ ঠাণ্ডা, বরফের চেয়েও ভীষণ,
নক্ষত্রহীন অন্ধকারে মৃত কিছুর চোখের মতো জগত।
আকাশ বলে কিছু নেই, মানুষের মুখে আর মানুষের মুখ নেই,
খুলে খুলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে বিষতীর ছুড়ে নিজের জীবনকে নিজেই নষ্ট করে দেবে।
কোনও উš§াদ ট্রেনের চাকার তলায়
শেষে ছুড়ে দেবে যা ছিল, যা আছে, হতে পারতো, সব।
এরকমই বলতে আমি চলে গেলে, হবে।
মরে যাবে তুমি।
আমি কিন্তু যাইনি কোথাও,
মিথ্যে মিথ্যে দোষ দিয়ে তুমিই দিব্যি হেঁটে গেছো।
পেছনে ডাকিনি আমি।
খানিকটা পথ গিয়ে ফিরে আসবে ভেবেই ডাকিনি।
দাঁড়িয়েছিলাম সারা দুপুর, বিকেল, ছিলাম সারা রাত।
কোথাও যাবার আমার কিছু ছিল না বলে যাইনি ভেবো না,
যাবো না বলেই এক পা নড়িনি। যেখানে রেখে গেছো,
সেখানেই শীতল হতে হতে স্তব্ধ হতে হতে পাথর হতে হতে
দাঁড়িয়ে ছিলাম।
কোথাও হয়তো তুমি,
টেনে-হিঁচড়ে বের করছো জীবনের ভেতর থেকে নিজের জীবন,
কোনও গভীর স্যাঁতস্যাঁতে গুহায় বা কোনও ট্রেনের লাইনে মুখ থুবড়ে পড়ে আছো-
আশংকার বিষধর সাপ আমার পাথর শরীর জুড়ে সারারাত হাঁটে।
সকালের শিশির তখনও ঘাসের ডগায় তির তির কাঁপছে,
তখনও মেলার মাঠ ঘুমঘুম।
আমি অবিশ্বাস্য চোখে দিখি কোনও এক রমণীর পায়ের কাছে
হাঁটু গেড়ে বসে সেই একই ভঙিতে ত্রিভঙ্গ কৃষ্ণের মতো ভিক্ষে চাইছো,
একই পদ্যে গদ্যে ভোলাতে চাইছো রমণীকে।
তোমার ওই হাসি, ওই চাহনীর অনুবাদ জানি দীর্ঘ দীর্ঘ দিন।
মনে মনে চুমু খাচ্ছো তাকে জানি। মনে মনে যতদূর যেতে পারো, গেছো।
আমি যে চেঁচিয়ে বলবো-যাকে যত ইচ্ছে ভালোবাসো,
শুধু দূরে গিয়ে বাসো, আমার চোখের সামনে বেসো না-
পারি না।
কণ্ঠস্বরও কেমন আশ্চর্য জমে আছে বরফের চেয়েও ভীষণ বরফে।