খোপের ভেতরে হুটোপাটি শুরু হয়ে গেছে,
ভোর হতে খুব দেরি নেই;
নতুন পুকুরে এইমাত্র জেগে উঠল কাতলের লেজ,
শব্দ এসে আছড়ে পড়ে জানালায়;
মৃদু-মৃদু শীতের কুয়াশা কে বা জেনেছিল, এত মনোরম!
ঘুমের আড়াল ভেঙে হাই তোলে মৃতরং স্বপ্নের বাসনা;
নড়ে ওঠে কচা-জিয়লের পত্রশূন্য শাখা,
যত্তসব মেঠোশালিখের ছাও-পোনা
নির্ঘাৎ জুটেছে এসে এতক্ষণে; এই গাঁও এই ভিটে
চিনে নিয়ে উঠোনের উত্তর-দক্ষিণে ছোটাছুটি কুকুর বউয়ের,
তাই দেখে, সুখে ও শান্তিতে ঘুমঘুম লেজ নাড়ে স্বামী;
একঝাঁক লালপিঁপড়ে মুখে নিয়ে খাদ্যের জোগান
পাড়ি ধরে সাত সমুদ্দুর তের-নদী কাঁঠালের
কাণ্ড বেয়ে ধুলো পায়ে বুক-পিঠ ঘষটিয়ে ঘষটিয়ে;
দূর থেকে পথে পথে গরুবাছুরের হাম্বা,
পথ ছেড়ে ঝোপেঝাড়ে লুকিয়ে পড়েছে বেজি ও খরগোশ;
এইবার ঘর হয়ে দাওয়া-পইঠা জুড়ে পদধ্বনি ভাঙাকথা
ছেঁড়া ডাল ঝরা পাতা ক্রমে-ক্রমে জ্বলে উঠবে উনুন দাপিয়ে,
ঘাসে-ঘাসে নীলাভ বালুর ওষ্ঠ বেয়ে গৃহমন্দির চালায়,
প্রতিবিন্দু শিশির ফোঁটায় একটি সূর্যমুখ;
সেই দিন এরা সব আগলে রইবে সদ্যখোঁড়া কবরের আশপাশ, মাটি;
শেষযাত্রা শুরু তবে আজ!