রাজপণ্ডিত হব মনে আশা করে |
সপ্তশ্লোক ভেটিলাম রাজা গৌড়েশ্বরে ||
দ্বারিহস্তে শ্লোক দিয়া রাজাকে জানালাম |
রাজাজ্ঞা অপেক্ষা করি দ্বারেতে রহিলাম ||
সপ্তঘটি বেলা যখন দগড়ে পড়ে কাঠি |
শীঘ্র ধাই আইল দূত হাতে সুবর্ণ লাঠি ||
কার নাম ফুলিয়ার পণ্ডিত কৃত্তিবাস |
রাজার আদেশ হৈল করহ সম্ভাষ ||
* * *
পাত্রেতে বেষ্টিত রাজা আছে বড় সুখে |
অনেক লোক দাণ্ডাইয়া রাজার সম্মুখে ||
রাজার ঠাঞি দাণ্ডাইলাম চারি হাত আন্তর |
সাত শ্লোক পড়িলাম শুনে গৌড়েশ্বর ||
পঞ্চদেব অধিষ্ঠান আমার শরীরে |
সরস্বতীপ্রসাদে শ্লোক মুখ হৈতে স্ফুরে ||
নানা ছন্দে শ্লোক আমি পড়িনু সভায় |
শ্লোক শুনি গৌড়েশ্বর আমা পানে চায় ||
নানামতে নানা শ্লোক পড়িলাম রসাল |
খুসি হৈয়া মহারাজ দিল পুষ্পমাল ||
কেদার খাঁ শিরে ঢালে চন্দনের ছড়া |
রাজা গৌড়েশ্বর দিল পাটের পাছড়া ||
রাজা গৌড়েশ্বর বলে কিবা দিব দান |
পাত্রমিত্র বলে রাজা যা হয় বিধান ||
পঞ্চ গৌড় চাপিয়া গৌড়েশ্বর রাজা |
গৌড়েশ্বর পূজা কৈলে গুণের হয় পূজা ||
পাত্রমিত্র সবে বলে শুন দ্বিজরাজে |
যাহা ইচ্ছা হয় তাহ চাহ মহারাজে ||
কারো কিছু নাহি লই করি পরিহার |
যথা যাই তথায় গৌরব মাত্র সার ||
যত যত মহা পণ্ডিত আছ এ সংসারে |
আমার কবিতা কেহ নিন্দিতে না পারে ||
সন্তুষ্ট হইয়া রাজা দিলেন সন্তোক |
রামায়ণ রচিতে করিলা অনুরোধ ||
প্রসাদ পাইয়া বাহির হইলাম সত্বরে |
অপূর্ব জ্ঞানে লোকে ধায় আমা দেখিবারে ||
চন্দনে ভূষিত আমি লোক আনন্দিত |
সবে বলে ধন্য ধন্য ফুলিয়া পণ্ডিত ||
মুনি মধ্যে বাখানি বাল্মীকি মহামুনি |
পণ্ডিতের মধ্যে কৃত্তিবাস গুণী ||
বাপ মায়ের আশির্বাদ গুরুর কল্যাণ |
রাজাজ্ঞায় রচে গীত সপ্তকাণ্ড গান ||
সাতকাণ্ড কথা হয় দেবের সৃজিত |
লোক বুঝাইতে কৈল কৃত্তিবাস পণ্ডিত ||